স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, এশীয় দেশগুলোর মধ্যে ঋণের দিক দিয়ে বাংলাদেশ সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেছেন, এসব দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে কম ঋণ।

মঙ্গলবার (২৪ মে) মন্ত্রণালয়ের নিজ দপ্তরে বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষ সাংবাদিকদের একথা বলেন মন্ত্রী।

তাজুল ইসলাম জানান, এশীয় দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম ঋণ আমাদের। আমরা কখনো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হইনি। সে জন্য বিশ্বব্যাংক আমাদের দেশকে আরো বেশি ঋণ দিতে চায়। আমরা অর্থায়ন সেই খাতে নেব, যেখানে বিনিয়োগের ফলে অর্থনীতির গ্রোথ হবে। আমরা ঋণ বুঝে-শুনেই নেব।’

শেখ হাসিনার সরকার অত্যন্ত বিচার বিশ্লেষণ করে বিদেশি বিনিয়োগগুলো গ্রহণ করছে বলেও উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক তো আসলে অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের সামগ্রিক অবস্থা অত্যন্ত স্থিতিশীল ও ঊর্ধ্বমুখী। এ বিষয়ে তারা আজ উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশ এখন উদীয়মান শক্তিশালী দেশ হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বর্তমানে অনেক ভালো।’

বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ঢাকাসহ সব শহরের পাশাপাশি গ্রামীণ উন্নয়নের ব্যাপারে পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া স্যানিটেশন, ওয়াটার সাপ্লাই, গ্রামীণ কমিউনিকেশন ডেভেলপমেন্ট, ব্রিজ, রাস্তাঘাট নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তারা সম্ভাব্য সবক্ষেত্র অর্থায়নের কথা বলেছে।’

আজকের মিটিংয়ের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধি দল তাদের হেডকোয়ার্টারে কিছু প্রোপজাল পাঠাবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে তাদের দুই দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলারের মতো অর্থায়নের প্রকল্প কাজ চলমান আছে।’

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘একটি ৩০০ মিলিয়ন ডলারের এবং আরেকটি ৫০০ মিলিয়ন ডলারের প্রজেক্ট ইতোমধ্যেই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তারা প্রায় একশ বিলিয়ন ডলার বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাদের অর্থায়নে চলমান প্রকল্পের বিষয়ে তারা অনেক ইতিবাচক বক্তব্য রেখেছে।’

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘যে বিনিয়োগগুলো আমাদের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার সার্বিক উন্নয়ন হবে সেসমস্ত বিনিয়োগগুলোকে উৎসাহিত করা এবং নেওয়ার বিষয়ে অত্যন্ত আমরা সতর্ক আছি। বিশ্বব্যাংক সারা বিশ্বে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে কাজ করায় আমাদের তুলনায় তাদের অভিজ্ঞতা বেশি আছে। সে জন্য আমরা যৌথভাবে কাজ করছি।’

পদ্মা সেতু নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এখন অপেক্ষায়। বিশ্বব্যাংক নিজেই এখন স্বীকার করে পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে বাংলাদেশ তাদের সক্ষমতা সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে।’

এসময় স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।